নোয়াগাঁও হামলার ঘটনায় জড়িত কেউই ছাড় পাবে না –প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান

শাল্লা প্রতিনিধি-
শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের হিন্দুদের বাড়িতে হামলা, মন্দির-মুর্তি ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় সারা দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এরই প্রেক্ষিতে নোয়াগাঁও গ্রাম সরজমিন পরিদর্শনে আসেন মাননীয় সরকারের ধর্মমন্ত্রণালয়ের ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যেকটি পরিবার পরিদর্শন করেন তিনি। এছাড়াও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ৮৮টি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে ৪লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেয়া হয়। পরে নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক মতবিনিময় সভায় যোগদেন তিনি। সভায় আওয়ামীলীগ নেতা বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুর পরিচালনায় ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান উপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সারা বিশ্বে অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এই অসাম্প্রদায়িক দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে একটি কুচক্রীমহল দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার পায়তারা চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তবে নওয়াগাও গ্রামের ঘটনায় আমিসহ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মর্মাহত হয়েছেন। ধর্ম নিয়ে যারা রাজনীতি করে তারাই দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে। তবে আমরা চাই নোয়াগাঁও গ্রামে যারা হামলা করেছে আইনের মাধ্যমে তাদের সুষ্টু বিচার হতে হবে। শুধু তাদেরকে নয়, ওদের পেছনে যাদের ইঙ্গিত রয়েছে তাদেরও আইনের মাধ্যমে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এখানকার স্থানীয় লোকজন দাবী করছে দ্রুত বিচার আইনে মামলা নেওয়ার জন্য। তবে কার্যকরী কোনো ভূমিকা না নিলে দ্রুত বিচার আইনে মামলা নিলেও কোনো লাভ হবে না। আমি স্থানীয় প্রশাসনকে বলছি নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে পরিচালনা করেন। যদি কোনো গাফিলতি থাকে তাহলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে। কারন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ হিন্দু অধ্যুষিত নোয়াগাঁও গ্রামে হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিশ্চিত করার। এছাড়াও তিনি বলেন, আমরা জানি সুনামগঞ্জে ধীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। এই বন্ধনকে অটুট রাখতে আমাদের সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি নোয়াগাঁও গ্রামে সার্বজনিন মন্দির প্রতিষ্ঠাার আশ্বাস দেন ও ওই গ্রামের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের পাকা বাড়ি নির্মাণ করার জন্য জেলা প্রশাসককে নির্দেশ প্রদান করেন। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ট্র্যাস্টের সভাপতি ও দিনাজপুরের এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল, সৃনামগঞ্জ ৫ আসনের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক, সুনামগঞ্জ ১ আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সাবেক সচিব অশোক মাধব রায়, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল হামিদ জমাদ্দার, বীরমুক্তিযোদ্ধা ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্র্যাস্টের ট্র্যাস্টি পারসন রাজেন্দ্র চন্দ্র দেব মন্টু, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্র্যাস্টের সচিব ডা. দিলীপ কুমার ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন, সহ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. অবনী মোহন দাস, শাল্লা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।